ইউনিভার্সেল কামালঃ
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নামের আদ্যক্ষর নিয়ে গঠিত ব্রিক্স জোটের প্রতিষ্ঠিত নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি)-এর সদস্য হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে ২ ফেব্রুয়ারী (রবিবার) দুপুর ২ টায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, এফসিএ, এমপি এবং এনডিবি’র প্রেসিডেন্ট মিঃ মার্কোস প্রাদো ট্রয়জো (Mr. Marcos Prado Troyjo) এর সাথে একটি ভার্চ্যূয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া উক্ত সভায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং এনডিবি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। সভার শুরুতে অর্থমন্ত্রী এনডিবি’র প্রেসিডেন্টকে ভার্চ্যূয়াল সভায় অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ জানান।এসময় অর্থমন্ত্রী ও এনডিবি’র প্রেসিডেন্টের মধ্যে পারস্পারিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে।
সভায় অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের গত ১২ বছরের অভাবনীয় অর্জন অবহিত করে বলেন, সদস্য পদের জন্য যেসকল শর্ত রয়েছে তার সবগুলোই বাংলাদেশের রয়েছে, তাই আশাবাদ ব্যক্ত করছি অচিরেই বাংলাদেশ এনডিবির সদস্য পদ অর্জন করতে পারবে। এনডিবি’র প্রেসিডেন্টও বাংলাদেশের অগ্রগতির বিষয়ে একমত পোষন করেন। তিনি সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশর প্রস্তাব বিবেচনা করেন। এসময় অতি দ্রুতই পরিবারসহ বাংলাদেশ সফর করবেন বলে জানান তিনি।
এনডিবির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালের ২১ জুলাই। ব্যাংকটির মোট মূলধন ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। আর প্রাথমিক মূলধন ৫ হাজার কোটি ডলার। ২০১৬ সাল হতে এনডিবি অবকাঠামো এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্রিক্সভুক্ত দেশে ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রদান করেছে।
এছাড়া, ব্যাংকটি অবকাঠামো, সেচ, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, পয়:নিষ্কাশন, সবুজ জ্বালানী এবং নগর উন্নয়ন খাত সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ প্রদান করে থাকে। ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার লক্ষ্যে সদস্য রাষ্টসমূহের কার্যক্রমে ব্যাংকটি অংশগ্রহণ করছে। ২০২০ সালে ব্যাংকটি একসাথে ৭২টি প্রকল্পে ২৫.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে। এনডিবির সদস্য পদ অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য ব্যাংকের পণ্য এবং পরিষেবা ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, সহনীয় সুদ হারে ঋণ নেওয়ার সুযোগ তৈরী; ব্যাংকের কৌশল, নীতি, পদ্ধতি ও কার্যক্রমে অংশগ্রহনের সুযোগ এবং সদস্য দেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী হবে।
আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার পর সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুযোগটি সীমিত হয়ে যাবে। তাছাড়া পাচঁ বছর মেয়াদী ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২১-২০২৫), টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), ভিশন-২০৪১, ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়ন এবং কোভিড-১৯ পরবর্তী চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলার লক্ষ্যে এনডিবি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন অর্থায়নের উৎস হিসেবে সূচনা করবে।
ভার্চ্যূয়াল সভায় অর্থমন্ত্রী এবং এনডিবি’র প্রেসিডেন্টের মধ্যে এনডিবিতে বাংলাদেশের ভূমিকা, নতুন ব্যাংকের ঋণের শর্তাবলীসহ বিনিয়োগ খাত এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে এনডিবি’র সদস্যভুক্তির মূল কার্যক্রমে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হবে এবং এ বিষয়ে পরবর্তীতে বিশদভাবে আলোচনা করা হবে।
আরো পড়ুনঃ