লালমাইয়ে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা: তদন্তের দাবী বড় বোনের

-ভোরের কলাম পত্রিকা থেকে নেয়াঃ-
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার লুদুয়া গ্রামে মোরশেদা আক্তার (২০) নামে এক যুবতীর চোখ-মুখে ক্ষত বিক্ষত ও শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্নসহ লাশ বাড়ি পাশ থেকে উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। পরে ময়না তদন্ত ছাড়া দাফন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তার পরিবারের লোকজনসহ নিহতের বড় বোন। তাঁর দাবি তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে। পুনরায় লাশ তুলে ময়নাতদন্ত করলেই আসল রহস্য বের হয়ে আসবে বলে তিনি জানান।

 

নিহত মোরশেদা আক্তার লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের লুদুয়া গ্রামের মো: আসলাম মিয়ার কন্যা। মোরশেদা আক্তার কুমিল্লা ইপিজেডের একজন শ্রমিক জানা যায়-গত ২১ জানুয়ারী শুক্রবার সকাল অনুমান ৭ ঘটিকার সময় লালমাই উপজেলার লুদুয়া গ্রামের তৈয়ব আলির বাড়ির উঠান থেকে চোখ-মুখে ক্ষত বিক্ষত ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্নসহ তার মরদেহ উদ্ধার পরিবারের লোকজন। রহস্যজনক কারণে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য পুলিশকে না জানিয়ে নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন সম্পন্ন করে। পরে ঘটনাটি এলাকাসহ স্বজনদের মাঝে জানাজানি হলে সকলে ক্ষোভ প্রকাশ করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন তাসলিমা আক্তার তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন- আমি আমার শশুর বাড়ি থেকে আসার পূর্বে একটি মহল আমার বোনের ব্রেইন ট্রক করেছে মর্মে তরিগড়ি করে দাফন সম্পন্ন করেন। আমি এই বিষয়ে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী করছি। আমরা তিন বোনের মধ্যে মোরশেদা সবার ছোট। গত দু বছর পূর্বে আমাদের পারিবারিক ভাবে এলাকার এক ব্যক্তির মাধ্যমে ইসলামী শরীহা মোতাবেক আমার ছোট বোন মোরশেদার ঢাকার মদনপুর এলাকার কালাম নামে যুবকের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর তাদের দু’জনের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে আমার বোন পিতার বাড়িতে থাকেন। আমার বাবা-মা দু’জনই বৃদ্ধ। পিতার কোন সম্পত্তি না থাকায় আমরা মায়ের সাথে নানার বাড়িতে তাদের বসবাস করি, আমার মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে আমাদের লালন পালন করে আমাদের তিন বোনকে বিবাহ দেন। আমাদের দু’ভাই তারা তাদের পরিবার নিয়ে আলাদা বসবাস করেন। আমার ছোট বোন মোরশেদা আক্তারের বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকে গত এক বছর যাবত কুমিল্লা ইপিজেড চাকুরি করেন। কিছুদিন পূর্বে জানতে পারলাম আমাদের পার্শ্বের গজারিয়া গ্রামের আবদুল মমিন মিয়ার ছেলে মহসিন (২২) নামে এক হোল্ডা মেকানিকের সাথে বিবাহ হয়েছে। তাই আমার বোন আর চাকুরি করবে না বলে ঘটনার তিন দিন পূর্বে গত ১৮জানুয়ারী সোমবার বিকেলে কুমিল্লা থেকে আমাদের লুদুয়া গ্রামের বাড়িতে চলে যান। বাড়িতে যাওয়ার পর থেকে মোরশেদা অনেকটা নিরব ভাবে থাকতেন। এ বিষয়ে বাড়ির লোকজনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে। যখনই বাড়িতে যান তখনই বেশিরভাগ সময় থাকেন বাড়ির উত্তর পার্শ্বে সম্পর্কে মামাত বোন এবং বান্ধবী তাজিয়ার সাথে।  সে সুবাধে ২০ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকালে চলে যায় বান্ধবী তাজিয়াদের বাড়িতে সারাদিন তাদের ঘরে অবস্থান ছিল মোরশেদার। তাই পরিবারের কেউ কোন প্রকার খোজ খবর নেননি। বান্ধবী তাজিয়ার দাবী রাতে তাদের ঘর থেকে বাড়িতে যাবে বলে বের হন। রাতে আর কেউ কোন খোজ খবর নেয়নি। সকালে পাওয়া গেল বান্ধবীর বাড়ির উঠানের পার্শ্বে লাশ। স্ট্রোক করেছে বলে দাফন সম্পন্ন। এ বিষয়ে নিতের মা সালেহা বেগম বলেন আমার মেয়ে বাড়িতে আসার পর ২/৩দিন কোন প্রকার খাবার খাচ্ছে না, আমি প্রতিদিন অন্যের বাড়িতে কাজ করে সন্ধায় বাড়িতে আসি। আমি মনে করেছি। আমার মেয়ে হয়তো ঘরের মধ্য ঘুমিয়ে পড়েছে অথবা তার বান্ধবীর সাথে ঘুমাচ্ছে তাই রাতে আর খোজ খবর নেই নাই, সকালে দেখতে পাই লাশ চেয়ারম্যান সাহেব বলেছে স্ট্রোক করেছে তাই আমরা কি করবো।
নিহতের পিতা আসলাম মিয়া বলেন- আমার মেয়ে লাশ বাড়িতে আনার পর চেয়ারম্যান সাহেব আসেন। তিনি বলেছে স্ট্রোক করেছে তাই জানাজা সম্পন্ন করে মাটি দিয়েছি আর বেশি কিছু বলতে পারবো না।

 

নিহতের বড় ভাই আলমগীর হোসেন বলেন- আমার বোন স্ট্রোক করেছে তাই জানাজা সম্পন্ন করে মাটি দিয়েছি। রাতে আপনার বোন বাড়িতে আছে কি না আপনাদের পরিবারের কোন লোকজন খোজ খবর নেন নাই কেন ? প্রতিবেদক  প্রশ্ন করার পর  তিনি বলেন, তার বান্ধবীর ঘর থেকে আসার সময় গাছের উপর পরে গিয়ে মৃত্যু হয়। আর কিছু বলতে পারবো না বলে চলে যান। এই বিষয়ে একই গ্রামের বাড়ির পার্শ্বের এক অটোরিক্সা চালক মোহন মিয়া বলেন মেয়েটি অত্যান্ত ভাল ছিল এলাকার কোন লোক মেয়েটিকে খারাপ বলতে পারবেনা, শুনেছি মেয়েটি রাতে বাড়িতে যাওয়ার সময় মাটিতে গাছের কয়েকটি টুকরা ছিল তাই অন্ধকারে পড়ে গিয়ে চোখে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে নাকি মারা যায়। নাজিম নামে এক জন বলেন- শুনেছি মেয়েটির দুগালে নোখের দাগ ছিল। নিহত মোরশেদার বাড়ির পার্শ্বে রয়েছে সাবেক চেয়ারম্যান এ জি এম সফিকুর রহমান এর বাড়ি এবিষয় যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন-মেয়েটি স্ট্রোক  করে মারা গেছে। তাই দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আইয়ূব বলেন মেয়েটির পরিবার থেকে কোন প্রকার যোগাযোগ করা হয়নাই । তাই বিষয়টি আমারা অবগত নাই।
ছবি ও তথ্য সুত্রঃ- ভোরের কলাম

     আরো পড়ুনঃ

পুরাতন খবর:

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১