-আবু সুফিয়ান রাসেল(কুমিল্লা)
কুমিল্লায় রেল পথের সিগন্যাল পয়েন্ট মেশিনের মোটর চুরির অভিযোগ উঠেছে। এতে ঝুঁকি বেড়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল পথের যাত্রায়। কুমিল্লার ৬৭টি পয়েন্ট মেশিনের মধ্যে ২৫টি পয়েন্টের মোটর চুরি হয়েছে। যার মাঝে রয়েছে আলীশহর, লালমাই, ময়নামতি, কুমিল্লা ও রাজাপুর স্টেশন। নাগরিকরা মনে করেন, চুরিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসূত্র থাকতে পারে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রেনের এক লাইনের সঙ্গে অন্য লাইনের সংযোগ ও বিচ্ছিন্নকরণের জন্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির যে মেশিন ব্যবহৃত হয়। তা কুমিল্লার বিভিন্ন স্টেশন এলাকা থেকে সেই মেশিনের মোটর চুরি হয়ে গেছে। এতে বিভিন্ন স্টেশনে লোকাল লাইনগুলো বন্ধ হয়ে পড়েছে।
কুমিল্লা রেলওয়ে কতৃপক্ষ জানিয়েছে, গত মে মাসে দুর্বৃত্তরা একের পর এক কুমিল্লা অঞ্চলের কয়েকটি স্টেশনের মোটর চুরি করে। যার মাঝে আলীশহর, লালমাই, ময়নামতি, কুমিল্লা ও রাজাপুর স্টেশন এলাকা থেকে চুরি করেছে ২৫টি সিগন্যাল পয়েন্টের মেশিনের মোটর। এতে ওই রেল স্টেশনগুলোতে বন্ধ রয়েছে লুপ লাইনে ট্রেন চলাচল এবং অতিগুরুত্বপূর্ণ ও দ্রুতগতির ট্রেন পাস।
এ অঞ্চলের পাঁচটি স্টেশনে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির ৬৭টি পয়েন্ট মেশিনের মধ্যে ২৫টি পয়েন্ট মোটর চুরি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চুরির ঘটনা ঘটে লালমাই ও ময়নামতি স্টেশনে। লালমাইতে ১২টির মধ্যে আটটি এবং ময়নামতিতে ১০টির মধ্যে ১০টিই চুরি হয়।
এ ঘটনায় রেলওয়ে কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী সংকেত আহমদ আলী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের কুমিল্লা অঞ্চলের রেলের সম্পদে বেড়েছে ঝুঁকি। গেল দুই সপ্তাহেই আখাউড়া ও লাকসাম ডাবল লাইনের ২৫টি পয়েন্টে চুরি হয়েছে প্রায় চার কোটি টাকা মূল্যের মোটর। চুরির
সনাক কুমিল্লার সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, চুরির পেছনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দায় রয়েছে রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তারও। আমরা আমরা জানি সারাদেশে মাত্র দু’টি প্রতিষ্ঠান রেল পথের নির্মাণ ও সংস্কারে কাজ করে যাচ্ছে। তাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসূত্র থাকতে পারে।
আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেললাইন প্রকল্প কুমিল্লার মিড লেভেল অপারেশনস অফ সেফটি অফিসার গোলাম মোস্তফা বলেন, সিগন্যালকে আধুনিকায়ন করতে প্রতিটি পয়েন্টে মেশিন কেনা হয়েছিল ১৫ লাখ টাকায়। চুরি হওয়া ২৫টি মোটরের পয়েন্ট মেশিনের দাম তিন কোটি ৭৫ লাখ টাকা। চুরি হওয়া মোটর উদ্ধার করতে রেলের জিআরপি থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ আলম জানান, মোটর চুরির ঘটনার অভিযোগ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দিয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এখন পর্যন্ত কোন পয়েন্ট মেশিন উদ্ধারের তথ্য হাতে নেই।