-মোঃ নাছির আহাম্মেদঃ মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় শূন্যে তুলে আছাড় মেরে এক ইউপি সদস্য কৃষক পিতাকে হত্যা করে। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ইছাপুরা গ্রামে। শনিবার তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শী, নিহতের পরিবার, পুলিশ জানায়, উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের কৃষক আমান উল্যাহর এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে কিছুদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছে বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ইউপি মেম্বার দেলোয়ার হোসেন মজুমদারের ছোট ভাই কাঠমিস্ত্রী সোহরাব।
গত ১৬ এপ্রিল রাত ১১টায় দিকে সোহরাব আমান উল্যাহর বাড়িতে গিয়ে তার মেয়েকে ডাকাডাকি শুরু করে। এসময় আমান উল্যাহ ও তার ছেলেরা চোর চোর বলে চিৎকার দেয়। তাদের চিৎকার শুনে আশেপাশের বাড়ির লোকজন বেরিয়ে আসে। খুঁজতে গিয়ে সবাই দেখে সোহরাব বাড়ির পাশের ধান খেতে শুয়ে আছে। এসময় তাকে ধরে উত্তম মধ্যম দেয়।
এখবর পেয়ে সোহরাবের ভাই দেলোয়ার মেম্বারের নেতৃত্বে ১০/১২জন রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমান উল্যাহর বাড়িতে হামলা করে।
পরদিন ১৭ এপ্রিল দুপুরে গ্রামের গণ্যমান্যদের ব্যক্তিদের আমান উল্যাহ বিষয়টি জানায়। গ্রামবাসীকে জানানোর কারণে দুপুরে দেলোয়ার মেম্বারের নেতৃত্বে তার ভাইয়েরাসহ কয়েকজন আমান উল্যাহকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। ঘর থেকে বের করার সময় দেলোয়ার মেম্বার আমান উল্যাহকে শূন্যে তুলে মাটিতে আছাড় দেয়। এরপর সবাই মিলে তাকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে ইছাপুরা গ্রামের শহীদের বাড়ির সংলগ্ন সড়কের পাশে ফেলে দেয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। এঘটনায় আমান উল্যাহর ছেলে আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৭ এপ্রিল বিকালে দেলোয়ার মেম্বারসহ এজাহারভুক্ত ৪জন ও অজ্ঞাতনামা ৭/৮জনের বিরুদ্ধে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় লালমাই থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ইছাপুরা গ্রামের ফজর আলীর ছেলে তোফাজ্জল ও আজগর আলীর ছেলে রবিউলকে আটক করে।
নিহতের ছেলে ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আবদুল জলিল সাংবাদিকদের বলেন, সোহরাবের চরিত্র খারাপ হওয়ায় তার স্ত্রী চলে গেছে। বেশ কিছুদিন ধরে সে তার বোনকে উত্ত্যক্ত করে আসছে। ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় দেলোয়ার মেম্বারের নেতৃত্বে তার বাবাকে খুন করা হয়েছে। খুনি দেলুসহ তার ভাইদের গ্রেফতার ও ফাঁসি চান তিনি।
লালমাই থানার ওসি মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, নিহতের ছেলে আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ১৮ এপ্রিল সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিমের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা শাহবাগ থানার মাধ্যমে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করি। দায়েরকৃত মামলায় ৩০২ ধারা সংযুক্তের জন্য আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ করি। এখন পর্যন্ত দুইজনকে আটক করেছি। ইউপি মেম্বার দেলোয়ারসহ বাকীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।